রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
ফিচার ডেস্ক।।
বিস্ফোরক ভান্ডারের ওপরে গড়ে উঠেছে মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা এক বসতি। ওপরে উজ্জ্বল আকাশ, চারপাশে গগনচুম্বী পাহাড় আর মাঝে ছোট্ট একটি গ্রাম মিতহোল্জ। সুইজারল্যান্ডের কিনডের উপত্যকায় আল্পস পর্বতমালার পাদদেশের এই পাহাড়ি গ্রামে প্রায় দুইশ পরিবারের বাস।
জায়গাটি পর্যটকদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় হলেও এই গ্রামের বাসিন্দারা ভয়ংকর এক ধ্বংসযজ্ঞের আশঙ্কার মধ্যে দিন কাটান। কারণ ওই এলাকায় মাটির নিচে থাকা হাজার হাজার টন বিস্ফোরক মুহূর্তেই তাদের পুড়িয়ে ছাইয়ে পরিণত করতে পারে। এ নিয়ে তাদের কপালে সারাক্ষণই দুশ্চিন্তার ভাঁজ থাকে। ৭৪ বছর আগের প্রাণঘাতী ঘটনা আজও গ্রামবাসীকে ঘুমের মধ্যে কাঁপিয়ে তোলে। তাই মৃত্যুর হাতছানি সঙ্গে নিয়েই তাদের বাস।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সুইজারল্যান্ডের সেনাদের অস্ত্রভান্ডার ছিল এই পাহাড়ি গ্রাম। মাটির নিচে গোপনে তারা এই অস্ত্রভান্ডর পরিচালনা করত। সেখানে মজুদ ছিল প্রচুর বিস্ফোরক। ১৯৪৫ সালে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা হলে বাসিন্দারা ভেবেছিলেন আর কোনো বিস্ফোরণ বা গোলাগুলির সম্মুখীন হতে হবে না। কিন্তু দু’বছর পর দুঃস্বপ্নের রাত ফিরে আসে তাদের জীবনে। গভীর রাতে আচমকা কেঁপে ওঠে গোটা গ্রাম।
সকাল হতে না হতেই পুরো গ্রাম পুড়ে ছাই হয়ে যায়। বহু মানুষ হতাহত হয়। সে সময় সাত হাজার টন বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটেছিল। পরে গ্রামটিকে নিরাপদ ঘোষণা করা হলে ফের বসতি গড়ে ওঠে। ২০১৮ সালে সেখানে মাটির নিচে আরও সাড়ে তিন হাজার টন বিস্ফোরকের সন্ধান পাওয়া যায়। বিস্ফোরকগুলো সরিয়ে নিতে ১০ বছর লাগবে। এই দীর্ঘসময় গ্রামবাসী ভিটে ছাড়া কাটাতে চান না। সূত্র-সুইসইনফো।